কক্সবাজার, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০২৪

নতুন প্রত্যাশা নিয়ে এলো ২০২৩

দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল আরও একটি বছর। ঘড়ির কাঁটা ১২টা অতিক্রম করার পরপরই বিদায় জানাতে হয়েছে ২০২২-কে। বরণ করে নেওয়া হয়েছে নতুন বছরকে, স্বাগত ২০২৩। সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরণ করা হয়েছে নতুন বছরকে। গত হওয়া বছরের দুঃখ-বেদনা, হাসি-কান্নাকে ভুলে নতুন কিছু, নতুন আলোর প্রত্যাশায় বরণ করা হয় নতুন বছরকে।

কালের গর্ভে হারানো ২০২২ আমাদের মনে গভীর দাগ ফেলে গেছে। নানা কারণে বছরটি ছিল ঘটনাবহুল। সে ঘটনায় আশা-নিরাশা সবকিছু পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় নিয়ে ২০২৩-কে স্বাগত জানিয়েছে মানুষ।

প্রতিবছরের মতো এই দিনটিতে বর্ষবরণে নানা আয়োজনে মেতে ওঠে জাতি। তবে এবার বর্ষবরণে নানা বিধিনিষেধ থাকায় আনন্দ উদযাপনে কিছুটা ভাটা পড়লেও তা থেমে থাকেনি। উম্মুক্ত স্থানে কোনো আয়োজন না করতে পারলেও আতশবাজি ও ঘরোয়া আয়োজনে মেতেছিল সবাই। এ ছাড়া যান চলাচলে সীমাবদ্ধতা থাকায় রাজধানীতে এবার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আয়োজনেই সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে সবাইকে। এরমধ্যেই কেউ কেউ বিধিনিষেধ অমান্য করেই পটকা ও আতশবাজি প্রকাশ্যে ফুটিয়ে আনন্দ উদযাপন করেছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন (পুলিশ ডিএমপি) পক্ষ থেকে এ বছর থার্টি ফার্স্ট নাইটে যেকোনো ধরনের আতশবাজি, পটকা কিংবা ফানুস ওড়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এ ছাড়া র‌্যাবের পক্ষ থেকেও ছিল বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে ‘খ্রিষ্টীয় নববর্ষ-২০২৩’ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।

শুভেচ্ছা বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, নবববর্ষ সকলের প্রাণে জাগায় নতুন স্পন্দন, নতুন আশা, নতুন সম্ভাবনা। নতুনকে বরণ করা মানুষের স্বভাবজাত প্রবৃত্তি।

বিরাজমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিবর্গের প্রতি দুঃস্থ, অসহায় মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবছর নববর্ষকে বরণ করতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী নানা আয়োজন করা হলেও করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর উৎসবের আমেজ ছিল অনেকটাই ম্লান। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট। ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিয়েছে এবং মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২৩ উপলক্ষে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ২০২২ সাল বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নের এক স্বর্ণযুগ। আমরা গত বছর ২৬ জুন দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত পদ্মা সেতু চালু করেছি। ২৮ ডিসেম্বর উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার মেট্রোরেল যোগাযোগ চালু করেছি। ২১ ডিসেম্বর দেশের ৫০টি জেলায় উন্নয়ন করা ১০০টি মহাসড়ক উদ্বোধন করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ নভেম্বর দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম চট্টগ্রামে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর দক্ষিণ টিউবের কাজ সম্পন্ন করেছি। ৭ নভেম্বর দেশের ২৫টি জেলায় ১০০টি সেতু নির্মাণ করে উদ্বোধন করেছি। ১৯ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট-২ এর রিঅ্যাক্টও প্রেসার ভেসেল স্থাপন করেছি। ২১ মার্চ পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র (১ম পর্যায়) উদ্বোধন করেছি। আমাদের অন্যান্য মেগা ও মাঝারিসহ সকল অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কাজও পুরোদমে এগিয়ে যাচ্ছে।

নবববর্ষে আমাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করে। পুরাতন দুঃখ-বেদনা ভুলে নতুন বছরে অপার সম্ভাবনার পথে এগিয়ে চলতে প্রেরণা জাগায়।

পাঠকের মতামত: